-->


প্রফেসর আলহাজ্জ্ব মনসুর উর রহমান
আল কোরআনের অর্থকাব্য 

#####################################

২৩ ছূরা মমিনুন (বিশ্বাসীগন) -

[আয়াত : ১১৮ ,রুকু :৬ , অবতীর্ন : মক্কায় , পারা: ১৮ ]

কৃপালু দয়াল আল্লাহর নামে আরম্ভ প্রথম।

###############################

১.    বিশ্বাসীরা জয়যুক্ত হয়েছে নিশ্চিত
২.   আপন নামাযে যারা বিন্ম্র বিনয়ী ,
৩.   অনর্থক বাক্য হতে দূরে থাকে যারা ,
৪.    জাকাত প্রদানে স্বত তৎপর ,
৫.    আপন যৌনাংগ সংরক্ষনে রাখে যারা ,
৬.   আপন স্ত্রী আর কৃতদাসী ছাড়া
     অন্য নারীতে উপগত হয়না কখনো ,
     এতে নিন্দনীয় হবে না তারা।
৭.    এতদ্ব্যতীত যারা যৌন কর্মে অন্যকে কামনা করে
     সীমা লংঘনকারী তারা।
৮.    আমানত অংগীকার সংরক্ষন করে যারা ,
৯.    আপন ছালাতে যারা বেশি মনোযোগী
১০.   তারাই তো উত্তরাধিকারী।
১১.   বেহেস্তের অধিকারী হবে তারা ,
         চিরস্থায়ী হয়ে যাবে তাতে
১২.   বিশ্বাসীরা জয়যুক্ত হয়েছে নিশ্চিত।

হাদিছে বর্নিত হয়েছেÑ আল্লাহ পাক যখন বেহেশত তৈরি করেন ও তাতে গাছপালা লাগিয়ে দেন এবং বেহেশতকে কিছু বলতে বলেন, বেহেশত তখন বলে : কাদ আফলাহাল মুমিনুন অর্থাৎ বিশ্বাসীরা জয়যুক্ত হয়েছে। এ হাদিছটি হজরত মুজাহিদ (রা:) হজরত কাব (রা:) হজরত আবুল আলিয়া (রা:) হজরত আবু সাঈদ (রা:) হজরত আব্বাছ(রা:) বর্ননা করেছেন।তবে তারা জান্নাতের জন্য যে ইঁট ব্যবহৃত হয়েছে তার গুনগত বর্ননা দিয়েছেন। জান্নাতের উক্তি বিশ্বাসীরা জয়যুক্ত হয়েছে।এ কথার তাৎপর্য , বেহেশতে প্রকৃত ঈমানদারগন প্রবেশ করবে। এতে মুনাফিক কাফির আর কৃপনরা প্রবেশ করবে না।

################################################

১৩.       সৃস্টি করেেছি মানুষ মৃত্তিকা—সার হতে।

১২.       তারপর রেখে দেই তাকে শূক্রবিন্দু রূপে (জরায়ু ) আধারে।

১৪.       এরপর জমাট রক্তে পনিত করি সে শূক্রবিন্দুকে।
          তারপর সে জমাট রক্তকে করে দেই (শক্ত) পিন্ড এক।
         এরপর সে পিন্ডকে অস্থিপুঞ্জে পরিনত করি,
         আবরিত করি তারপর সে অস্থিকে মাংস আচ্ছাদনে,
         পরিশেষে উত্থিত করি তাকে অন্য এক (নবতর) সৃষ্টি রূপে।
          মহিমা মন্ডিত আল্লাহ , শ্রেষ্ঠ স্রোষ্টা তিনি।

১৫        পরবর্তি কালে অবশ্যই করবে তোমরা মরন বরন।

১৬.       অত:পর কেয়ামতে পুনজীর্বিত করা হবে তোমাদের।

১৭.       সপ্ত আকাশ করেছি সৃষ্টি তোমাদের উর্ধ দেশে।

            অন্যমনষ্ক ছিলাম না তো সৃষ্টিতে আমার।

১৮.         বৃষ্টি ঝরাই আমি আকাশ হতে যথা পরিমানে ,

            তারপর মৃত্তিকায় ধরে রাখি তাকে

১৯.         এর পর তা হতে খজ্জর্ুর আংগুর উদ্যান

২০.         সৃষ্টি করেছি তোমাদের (কল্যানে)।

            পেয়ে থাকে তাতে ফলাদি প্রচার

            তাহতে আবার দূর করে দিতে সক্ষম আমি।

            আর তা হতে ভক্ষন  করে থাকো।

২০.      ছিনাই পর্বতে জন্মে বৃক্ষ এক,

          তা হতে উৎপন্ন হয় তেল তরকারী ভক্ষনকারীদের।

২১.       চতুষ্পদ জন্তুতেও ভাববার আছে তোমাদের,

            পান করাই তার উদরস্ত বস্তু (দুধ) তোমাদের আমি ,

            রয়েছে তাতে তোমাদের কল্যান অনেক।

            তাছাড়াও তোমরা তাদের ভক্ষন করে থাকো।

২১.     তাদের পৃষ্ঠোপরে আর নৌযানে তোমরা আরহন করো।

##################################################

১২.       সৃষ্টি করেছি মানুষ মৃত্তিকা সার হতে।

                                                            এ আয়াতটিতে আল্লাহপাক মানুষের সৃষ্টি প্রকৌশলের বর্ননা দিয়েচেন ।এ রকম বর্ননা আল কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে রয়েছে।আল্লাহপাক প্রথম মানুষ অর্থাৎ হজরত আদম (আ:) মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। যে মাটি থেকে তার দেহ তৈরি করেছেন , সে মাটিকে প্রথমে নরম কাদায় তারপর তাকে শুকনো ঠন ঠনে ও শক্ত করা হয়েছে, যা পোড়ানো খাপরার মত বাজে। এ মা টি পৃথিবী থেকে নেয়া এক মুষ্ঠি মাটি, যা জমিনের সব জায়গা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সে কারনে আদম সন্তানরা বিভিন্ন রূপের বিভিন্ন রংএর হয়েছে।কেউ লম্বা কে্উ খাটো কে্্উ মাঝারি , আবার কেউ কালো কে্উ ফর্সা কেউ বাদামি কেউ পীত ইত্যাদি। মাটির কারনে কেউপবিত্র কেউ অপবিত্র হয়েছে।(অহমদ ,আবু দাউদ , তিরমিজি)। মৃত্যুর পর মানুষের দেহ আবার মাটিতেই গলে পঁচে মিশে যাবে। তবে মেরূদন্ডের পিছনের পাছার হাড়ের একটি অংশ অবশিষ্ট থাকবে , যা থেকে মৃত মানুষকে আবার পুনর্গঠিত করা হবে। 
- রাছুল (ছা: ) বলেছেন। হজরত আবু হোরায়রা (রা:) হতে বর্নিত।

এরপর আল্লাহপাক মানুষের মধ্যে তুচ্ছ পানি অর্থাৎ শূক্র তৈরি করেছেন। কাদামাটি হতে মানুষ সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হলেও পরবর্তিতে এ শূক্রই হলো মানুষের বংশ বৃদ্ধির চলমান মূল উপকরন। আল্লাহ পাক বলেন: যিনি তার প্রত্যেক সৃষ্টিকে উত্তম রূপে সৃষ্টি করেছেন এবং মাটি হতে মানুষ সৃষ্টির সূচনা করেছেন। তারপর তুচ্ছ তরল পদার্থের নির্যাস হতে তার বংশ বৃদ্ধি করেছেন। ( ছেজদা : ৭-৮) । প্রথমত পুরুষের শুক্র নারীর গর্ভাশয়ের নিরাপদ গর্ভাধারে রাখা হয়। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সে শুক্র গর্ভাধারে অবস্থান করে। তারপর বিভিন্নভাবে তার অবস্থার পরিবর্তন সাধিত হয়। একটি আকার হতে অন্য একটি আকারে রূপান্তরিত হতে থাকে। শূক্র হলো না একটি তরল পদার্থ যা পুরুষের পৃষ্ঠদেশ আর নারীর বক্ষদেশ হতে নির্গত হয়। নারী পুরুষের মিলনের সময় শূক্র বা তরল পদার্থ তীর গতিতে বের হয়ে আসে। শূক্রের পরিবর্তনের পরবর্তী প্রক্রিয়া আল্লাহপাক ধারাবাহিক ভাবে বর্ননা করেছেন। মাতৃগর্ভে শূক্র প্রথমত চল্লিশ দিন অবস্থানের পর লাল রংএর পিন্ডে পরিনত হয় ( যাকে রক্তপিন্ড বলা হয় )। গর্ভে এ পিন্ড চল্লিশ দিন থাকার পর গোস্ত পিন্ডের আকার ধারন করে। যা চল্লিশ দিন এভাবে থাকে। এ গোস্ত পিন্ডে মানব দেহের কোন আকার থাকে না। আল্লাহপাক এ অবস্থায় একজন ফেশেতা পাঠান। তিনি এ পিন্ডে ফুঁ দিয়ে দেন এবং চারটি বিষয় লিপিবদ্ধ করেন। এ গুলো হলো তার রেজেক রুজি আমল আয়ু ও ভাগ্য। (ইমাম বুখারী, মুছলিম, আহমদ - ইবনে মাছ্উদ (রা:) হতে বর্নিত । গোস্ত পিন্ডে এর পর হাড় বা অস্থি তৈরি হয়। এতে মাথা হাত পা শিরা পাছা আকৃতি লাভ করে। এরপর অস্থি পিন্ডকে গোস্ত দিয়ে ঢেঁকে দেয়া হয়। যাতে হাড় অটুট থাকে।

নিষ্প্রান দেহে রুহ ফুঁকে দেয়ার পর তা নড়া চড়ার যোগ্য হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় সে জীবন্ত রূপ ধারন করে।অবশেষে এক অবুজ অবোধ শিশু রূপে জন্ম গ্রহন করে । - 
                                                                ২৩.     নূহকে পাঠালাম তার আপন গোত্রের কাছে
            উক্তি ছিলো তার: হে গোত্র আমার ,
             আরাধনা করো আল্লাহর ,
                তিনি ভিন্ন নেই তোমাদের উপাস্য কোন,
                তবুও সতর্ক কি হবে না তোমরা ?

      ২৪.      সত্যত্যাগী গোত্রপতিরা জানালো তাদের ;
            তোমাদের মত মানুষ ভিন্ন এজন অন্য কেউ                           পহতো নয়।
               অভিপ্রায় তার আধিপত্য করা তোমাদের উপর ,
                ইচ্ছা হলে আল্লাহর ফেরেশতা পাঠাতেন তিনি,
             এমন তো শুনিনি আমরা আমাদের পূর্বপুরুষের কালে।

      ২৫.      নিশ্চয়  এত  এক উন্মাদ পুরুষ।
            তার সাথে আর তিছুকাল অপেক্ষা করে থাকো।

      ২৬.      প্রার্থনা নূহের: হে আমার প্রভু,
             আমাকে সাহায্য করো
              আমাকে কেবল এরা মিথ্যাবাদী বলে।

 ২৬.           এরপর ঐশী আদেশ পাঠালাম তাকে:
               প্রস্তুত করো নৌযান আমার তদারকি আর নির্দেশে
             অতপর এসে যাবে যখন নির্দেশ আমার

            ভূপৃষ্ঠের উনান হতে জলধারা পুত্থিত হবে।
             তখন তুলে নিও নৌযানে
              প্রাত প্রানীর নারী নর একজোড়া করে।
              তুলে নিও আপন পরিবার পরিজনে,
               দের ভিন্ন ,ডাদের বিপক্ষে রায় নির্ধারিত হয়ে গেছে।
              অত্যাচারীদের কথা বলো না আমাকে ,
               নিশ্চিত তারা জলনিমগ্ন হবে

২৭.  যৌযানে আরহন করবে যখন

তুমি আর তোমার নৌসংগীগন

তখন করো উচ্চারন :

সকল প্রশংসা সেই আল্লাহর ,

অত্যাচারী সম্প্রদায় হতে যিনি রক্ষা করেছেন।

২৮.  প্রার্থনা করো আরো:  হে আমার পালক,

তোমার কল্যান সহ আমাকে নামিয়ে দিও ( নৌযান হতে) ,

নামাবার কাজে তুমি শ্রেষ্ঠ অধিক।

৩০  অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে এতে ,

    আমি তো পরীক্ষা নিয়েছি তাদের।

            ৩১.       অত:পর তাদের পরবর্তী কালে

            সৃষ্টি করেছি আমি অন্য সম্প্রদায়।

৩২.              তাদের কাছে তাদেরই মধ্য হতে

            পাঠিয়েছিলাম  এক প্রেরিত পুরুষ এই উক্তি সহ :

            উপাসনা করো আল্লাহর।

            তিনি ভিন্ন নেই আর উপাস্য আরেক ।

            সতর্ক হবে না কি তবুও তোমরা ?

২৭.       প্রস্তুত করো নৌযান আমার তদারকি আর নির্দেশে।

            হজরত নূহ (আ:) তার সুদীর্ঘ নাবুয়াতি জীবনে

                                    ৩

            ৩৩.       সত্যত্যাগী ছিলো যারা

পর জীবনের সাক্ষাতে ছিলো অবিশ^াসী,

পার্থিব জীবনে দিয়েছিলাম যাদের অঢেল সুখ সম্ভার ,

ভাষ্য তাদের গোত্রপতিদের:

এতো তোমাদের মত একটি লোক

আহার্য গ্রহন করে তোমরা যে আহার করো,

এতো পান করে তাই তোমরা যা পান করে থাকো।

            ৩৪.       তোমদেরই মত কোন লোকের আনুগত্য করো যদি,

                                                                                    তাহলে নির্ঘাৎ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

৩৫.                সে কি রাখে তোমাদের কাছে এই অংগিকার ?

তোমাদের মৃত্যু হলে

আর তোমাদের হাড়গোড় মৃত্তিকায় পরিনত হলে ,

পূনর্জিবিত করা হবে তোমাদের ?

৩৬.       তোমাদের কাছে প্রদত্ত সেই অংগিকার ( কেয়ামত)

          সংঘটিত হবে না কখনো , কখনই না।

৩৭.       পার্থিব জীবন একমাত্র জীবন আমাদের ,

        জন্ম মৃত্যু আমাদের এখানেই ঘটে।

          (এখানেই মরি আর এখােনেই বাঁচি)

          পূনর্জীবিত আমরা আবার হবো না কখনো ।

৩৮.       এতো সেই লোক আল্লাহতে যে করেছে মিথ্যারোপ,

          আমরা তাতে বিশ^াসী হবো না কখনো।

৩৯.       প্রার্থনা তার: হে পালক আমার ,

           সাহায্য দাও আমাকে ,

           আমাকে কেবল মিথ্যাবাদী বলেছে এরা।

                                                          ৪০.       জবাব আল্লাহর:

         অনুতপ্ত হবে তারা অতি সত্বর।

                                                          ৪১.    অনন্তর গ্রাস করে নিলো তাদের যথার্থভাবে

এক মহাভয়ংকর ধ্বনি।

দলিত মথিত আবর্জনাবৎ তারা তাড়িত হলো

(তরংগ সংকুলে )।

অত্যাচারিত সম্প্রদায় বিদূরিত (আল্লাহর অনুগ্রহ হতে)

৪২.   রপর সৃষ্টি করেছি আমি অন্য বহু সম্প্রদায়

৪৩.    ত্বরান্বিত বা বিলম্বিত করতে পারে না কোন সম্প্রদায়

            তারে নির্ধারিত কাল।

৪৪.       তারপরেও আমার প্রেরিত পুরুষ পর পর করেছি প্রেরন।

যখনই এসেছে আমার কোন প্রেরিত জন কোন গোত্রের কাছে ,

তখনই তার উপর মিথ্যারোপ করেছে তারা।

অনন্তর একে একে বিনাশ করেছি তাদের ,

বানিয়েছি উপজিব্য গল্পকাহিনীর।

অবিশ^াসী সম্প্রদায় দূর হয়ে যাক (আল্লাহর অনুগ্রহ হতে)।

৪৫.              তারপর হারূন মূছাকে করেছি প্রেরন

            আমার নিদর্শন আর পস্ট প্রমান সহ

৪৬.              ফেরআউন আর তার অমাত্য বর্গের কাছে ,

            অথচ তারা দেখালো অহংকার ,

            বস্তুত তারা ছিলো অবাধ্য জাতি।

৪৭.              বিশ^াস আনবো কি আমরা

            আমাদেরই মতন দুজন লোকের উপর ?

            গোত্র যাদের আমাদের কৃতদাস ?

৪৮.               কার্যত তারা মিথ্যারোপ করেছিলো দুজনের উপর।

            অবশেষে কারা ধ্বংস হয়ে গেলো।

৪৯.              মূছাকে গ্রন্থ দিলাম সুপথ যাতে পেতে পারে তারা।

৫০.              মারিয়াম পুত্র আর জননীকে তার করেছিলাম নিদর্শন এক,

            দিয়েছিলাম আশ্রয় তাদের

            বাসযোগ্য নিরাপদ উচ্চ ভ’মিতে।

                                    ৪

৫১.               হে প্রেরিত পুরুষগন ,

            পবিত্র খাদ্য ভক্ষন করো, করো সুকর্ম সাধন ,

            সবিশেষ জ্ঞাত আমি তোমাদের কৃতকাজ।

৫২                 তামাদের এ সম্প্রদায় বস্তুত একই সম্প্রদায় ,

                                                আমিই প্রভু তোমাদের , ভয় করো আমাকে।

৫৩.  কার্যত নিজেদের কর্মকাজে বিভক্ত এরা বহু দলমতে।

প্রতি দল পরিতুষ্ট নিজ নিজ মতবাদে।

৫৪.  অজ্ঞতায় বরং থাকতে দাও এদের নির্ধারিত সময় অবধি।

৫৫.  ভেবেছে কি এরা?

    ঐশ্বর্য সম্পদ সন্তানাদি এদের দিয়েছি বলে

৫৬.  শীঘ্র কি নিয়ে যাচ্ছি এদের কল্যানের ভেতর ?

    এরা বরং বোঝে না কিছুই।

৫৭.  নিসন্দেহে ভীত এরা আপন প্রভুর ভয়ে,

৫৮.  বিশ^াস রাখে তার প্রভুর নিদর্শনে ,

৫৯.   স্বীয় পালকের সাথে করেনা অংশীবাদ ,

৬০.    যা কিছু দানের দান করে থাকে ভীত বিহ্বল মনে ,

৬১.   কল্যান কাজ তারাই দ্রুত করেছে সাধন ,

    অগ্রবর্তী হয়ে গেছে তাতে।

৬২.   অসাধ্য কাজের বোঝা ন্যস্ত করি না কারো উপরে আমি।

    আমার নিকটে রয়েছে দলিল প্রকৃত সত্য যা করে প্রদর্শন।

৬৩.   এ হতে তাদের অন্তরে বরং অন্তরায় ভরে আছে ,

    এতদ্ভিন্ন আরো কুকাজ রয়েছে তাদের,

    যা তারা নিষ্পন্ন করে।

৬৪.   সম্পদশালীদের যখন যন্ত্রনাবিদ্ধ করে দেবো ঘোরতর,

      আর্তচিৎকার তখন করে উঠবে তারা।

৬৫.     (তাদেরকে বলা হবে):

        আর্তনাদ আজ করো না তোমরা ,

            সহায়তা পাবে না কোনই আমার পক্ষ হতে।

৬৬.     পঠিত হতো যখন আমার নিদর্শন তোমাদের কাছে ,

        পশ্চাদপদে সরে গেছো তোমরা তখন

৬৭.     আত্মঅহংকারে , কল্পকাহিনী ভেবে ,

        এ বিষয়ে অযথা উক্তি করে।

৬৮.   তবে কি ভাবে না তারা এ(ঐশী) বানীর কথা?

                                                            অথবা সমাগত তাদের কাছে এমন (নতুন) বিষয়

     যা কখনো আসেনি তাদের পিতৃপুরুষের কাছে ?

 ৬৯.      অথবা-

                                                            তাদের প্রেরিত পুরুষকে চেনে নাকি তারা ?

 সে কারনে অস্বীকার করে বসে তাকে ?

৭০.              অথবা ,

            তারা কি উক্তি করে—— সে তো উন্মাদ ?

            অথচ সত্য সহসে এসেছে সে তোমাদের কাছে।

            বস্তুত সত্যকে ঘৃনা করে অধিকাংশ তাদের।

৭১.               সত্য যদি অনুসারী হতো তাদের প্রবৃত্তির ,

            মহাকাশ পৃথিবী আর তার মধ্যবর্তী যা কিছু সকল

            লন্ড ভন্ড হয়ে যেতো তবে।

            কার্যত তাদের কাছে তাদের উপদেশ বানী পাঠিয়েছি আমি।

            অথচ তারা হয়েছে বিমুখ সে উপদেশ হতে।

৭২.           অথবা-

                                                                প্রতিদান কামনা কি করো তুমি তাদের কাছে?
            সর্বোত্তম তোমার প্রভুর প্রতিদান।
            তিনিই সর্বোত্তম জীবিকা দাতা।

৭৩.              তুমি তো তাদের সরল পথে তাদের কজরো আহ্বান ।

৭৪.              পরলোক অবিশ^াসী যারা ,সৎপথ বিচ্যুত তারা।

৭৫.              কৃপা বষর্ন করি যদি তাদের উপর,

                  বিদূরিত করে দেই আপতিত দুর্দশা তাদের ,

            তবু তারা অবাধ্য হয়ে পথ বিভ্রান্তিতে ঘুরে মরে শুধু

৭৬.              তাদের যন্ত্রনাহত করেছি আমি ,

            তাদের প্রভুর কাছে অবনত হয়নি তবু ,

            কাতর মিনতিও জানায়নি তারা।

৭৭.     যখন তাদের উপর উন্মুক্ত করি সুকঠিন যন্ত্রনার দ্বার ,

            আশাহত হয়ে যায় তখনি তারা।

                                    ৫

৭৮                তনিই তোমাদের চক্ষু কর্ন অন্তর সৃষ্টি করেছেন ,

            অথচ অল্পই তোমাদের কৃতজ্ঞ থাকো।

৭৯.              ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়েছেন তিনি তোমাদের ,

            (অবশেষে ) তারই কাছে তোমরা হবে সমবেত।

৮০.              জন্ম মৃত্যু তিনিই ঘটান,

            দিবারাত্রির অনুবর্তন তাঁরই অধিকারে

            তবুও তোমরা বুঝনাকি তা ?

৮১.               বরঞ্চ এরা সে কথাই বলে

            পূর্ববর্তীরা তাদের বলেছিলো যেরূপ ।

৮২.              উক্তি তাদের :

            আমাদের মৃত্যু হলে

            ধূলি মৃত্তিকা হাড়ে পরিনত হয়ে যাবো ,

            কি করে আমরা তবে পুনর্জীবিত হবো ?

৮৩.              এরূপে প্রতিশ্রম্নত হয়েছি আমরা

            হয়েছে আমাদের বিগত পূর্বপুরুষ ।

            অথচ এসব অতীত কল্পকাহিনী ভিন্ন কিছু নয় আর।

৮৪.              জিজ্ঞাসা করো তাদের:

            এ পৃথিবী আর যা কিছু তার কার অধিকারে ?

             (উত্তর দাও ) জানা থাকে যদি।

৮৫.              জানাবে তারা: সবকিছু আল্লাহর।

            তাহলে তোমরা ভেবে দেখো না কেন ?

৮৬.              প্রশ্ন করো তাদের :

            সপ্ত আকাশ আর মহা সিংহাসনের কে সে অধিপতি ?

৮৭.              তাদের উত্তর হবে:  (সবকিছু) আল্লাহর।

            বলে দাও তাদের:

            সতর্ক হবে না তবু কি তারা ?

৮৮.              জিজ্ঞেস করো তাদের :

            সবকিছুর আধিপত্য ন্যস্ত কার হাতে ?

            রক্ষা করেন সবাইকে যিনি,

            তার ্উপরে রক্ষক নেই আর।

            উত্তর দাও , যদি জানা থাকে তোমাদের।

৮৯.              উত্তর তাদের: (সবকিছু) আল্লাহর।

            তাদেরকে বলো :

            তবুও কি করে তারা বিভ্রান্ত হয়?

৯০.              তাদের কাছে আমি সত্য করেছি প্রেরন।

            অথচ নিশ্চিত মিথ্যাবাদী তারা।

৯১.               গ্রহন করেননি আল্লাহ কোনই সন্তান,

            তার সাথে নেই কোন উপাস্য আরেক

            তা হতো যদি,

            প্রত্যেক উপাস্য ভাগ হয়ে যেতো

            আপন সৃষ্টি সহ।

            চাইতো তাদের আধিপত্য বিস্তার পরষ্পরের উপর।

            মহাপবিত্র আল্লাহ তাদের আরোপিত উক্তি হতে।

৯২.              সব কিছু জ্ঞাত তিনি প্রকাশ্য গোপন,

            অনেক উর্ধে তিনি আরোপিত অংশিবাদ হতে।

                                    ৬

৯৩.              প্রার্থনা করো : হে প্রভু আমার ,

            আমাকে দেখাও যদি তাদের প্রতিশ্রম্নত বিষয় (দন্ড ঘোরতর)।

৯৪.              তবে হে পালক,

            অত্যাচারীদের দলভুক্ত করো না আমাকে।

৯৫.              ( দন্ডের) যে বিষয়ে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছি তাদের ,

            তোমাকে অবশ্যই দেখাতে সক্ষম আমি।

৯৬                মন্দকে প্রতিহত করো উত্তম ব্যবহারে,

            তাাদের কথিত কথন  সবিশেষ জ্ঞাত আমি।

              ###############################################################

                                                      ৯৬.       মন্দকে প্রতিহত করো উত্তম ব্যবহারে। আল্লাহ পাক তাঁর রাছুল ( ছা:) কে মানুষের মন জয় করার ও শত্রুকে বন্ধুতে পরিনত করার  ্উপায় শিখিয়ে দিয়েছেন।যারা তোমার সাথে মন্দ ব্যবহার করে তুমি তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করো  যাতে শত্রুতা বন্ধুত্বে ঘৃনা ভালবাসায় পরিনত হয়। এতে অনেক কঠিন সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। ছূরা হা— মিম— সাজদা : ৩৪—৩৫ নং আয়াতে বলেন: মন্দকে প্রতিহত করো উত্তম দ্বারা, ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে সে হয়ে যাবে তোমার অন্তরংগ বন্ধুর মত।এ গুনের অধিকারী করা হয় শুধু ধৈর্যশীলদের।এ গুনের অধিকারী তারাই হয় যারা ভাগ্যবান।

                 

                                     

৯৭.      প্রার্থনা করো: হে পালক আমার ,

            তোমার সকাশে চাই আশ্রয় শয়তানের কুমন্ত্রনা হতে

৯৮.              প্রভু হে আমার ,

            তোমার কাছে আশ্রয় চাই আরো

            তাদের উপস্থিতি হতে।

৯৯.              তাদের কাছে মৃত্যু আসন্ন হলে

            আবেদন তার : হে প্রভু আমার ,

            ফেরৎ পাঠাও আমাকে (পার্থিব জীবনে) পুন।

১০০.           করতে পারি যাতে সুকর্ম সাধন ,

            অবহেলা করেছিলাম ইতিপূর্বে যাকে।

            (সম্ভব )কখনো তা নয় ।

            এতো শুধু তার কথার কথা,

            তাদের সম্মুখে এক যবনিকা থেকে যাবে

            পুনরুত্থান দিবস অবধি।

১০১.           তারপর যেদিন  শিংগাতে দেয়া হবে ফুৎকার,

            সেদিন তাদের মধ্যবর্তী রবে না কোন আত্মীয়তা বন্ধন।

            কেউ কারো খেঁাজ নেবে না (তখন)।

১০২.           ( সৎকর্মের) পাল্লা যাদের গুরুভার হবে ,

            তারাই তো হবে সফলকাম।

১০৩.           পাল্লা যাদের লঘু হয়ে যাবে ,

            আপন ক্ষতি তারা করেছে সাধন,

            চিরস্থায়ী হয়ে যাবে  নরক বিবরে।

১০৪.           দগ্ধ করে দেবে আগুন মুখমন্ডল তাদের,

            মুখাকৃতি  তাদের বিকৃত হয়ে যাবে বিভঃস্য কুৎসিৎ।

১০৫.           পঠিত হয়নি কি তোমাদের কাছে নিদর্শন আমার?

            অথচ তোমরা মিথ্যা ভেবেছো তাকে।

১০৬.           ভাষ্য তাদের : হে আমপাদের প্রভু ,

            পরিবেষ্টন করেছিলো দুর্ভাগ্য আমাদের,

            পথভ্রষ্ট সম্প্রদায় আমরা ছিলমি।

১০৭.     হে প্রভু আমাদের ,

            বের করে আনো ঐ অনল কুন্ড হতে ,

            পুন যদি ‘করি অস্বীকার

১০৮.       হয়ে যাবো আমরা তবে ঘোর অত্যাচারী।

            উত্তর আল্লাহর:

            পড়ে থাকো এখানেই পতিত হয়ে,

            বলো না আমার সাথে কোন কথা আর।

১০৯.           আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলো এক দল,

            যাদের প্রার্থনা ছিলো: হে আমাদের প্রভু ,

            আমরা এনেছি বিশ^াস ,মার্জনা করো আমাদের ,

            করো অনুগ্রহ প্রদান,

            দয়ালুদের শ্রেষ্ঠ দয়াল তুমি।

১১০.           অথচ তোমরা তাদের নিয়ে

            হাসি কৌতুকে এমন মত্ত ছিলে,

            বিস্মৃত করেছিলো তোমাদের আমার স্মরন।

            (বস্তুত ) তোমরা তাদের নিয়ে

            হাসি তামাসাই করতে ( কেবল)।

১১১.            তাদের দিলাম আজ ধৈর্যের প্রতিদান ,

            যথার্থ সার্থক তারাই।

১১২.           আল্লাহর জিজ্ঞ্যস্য হবে :

            কত বর্ষ পৃথিবীতে করেছো বসতি ?

১১৩.           উত্তর  তাদের :

            আমরা সেখানে ছিলাম একদিন

            অথবা দিনের  অংশ বিশেষ,

            হিসাবকারীদের কাছে জিজ্ঞাসা করো।

১১৪.           স্বল্প সময় তোমরা সেখানে ছিলে

            (সে কথা) তোমরা জানতে যদি ।

                        ########################################

                                                                        ১১৪.স্বল্প সময়ে তোমরা সেখানে ছিলে।

                                                     পারলৌকিক সময়ের তুলনায় পার্থিব সময় অতি অল্প। তা সত্বেও অংশীবাদী কাফিররা আর দুনিয়া মুখি মানুষেরা পার্থিব সময়কে একমাত্র জীবনকাল ভেবে নানাবিধ অন্যায় ও মন্দকাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। একদিন তাদের পার্থিব জীবন শেষ হয়ে আসে। পরজীবনে তারা আল্লাহর শাস্তির সম্মুখিন হয়ে পড়ে। তখন  পার্থিব জীবন তাদের কাছে অতি অল্প সময় বলে মনে হয় পরজীবনের অনন্ত সময়ের তুলনায় । কেয়ামতের দিন যখন তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে Ñ পৃথিবীতে তোমরা কতদিন ছিলে ? তারা বলবে : অতি অল্প সময় আমরা পৃথিবীতে ছিলাম । একদিন বা তার কিছু অংশ। আখেরাতের জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে যদি তারা পথিবীর স্বল্প কালীন সময়ে খারাপ কাজ না করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভাল কাজ করতো আর সকল কাজে আল্লাহর আনুগত্য করতো , তবে পরজীবনে পরম সুখে থাকতে পারতো। পৃথিবীতে এ কথা যদি তারা বুঝতে পারতো। ভেবেছো কি তোমরা? অযথাই তোমাদের সৃষ্টি করেছি আমি? আমার কাছেতে ফিরে আসবে না কখনো কি তোমরা?

১১৫.           মর্যাদাবান মহান আল্লাহ প্রকৃত স¤্রাট তিনি।

            তিনি ভিন্ন নেই উপাস্য কোন ,

            সম্মানিত সিংহাসনের তিনি অধিকারী।

১১৬.           আল্লাহ ভিন্ন অন্য উপাস্যের যে করে উপাসনা,

            এ বিষয়ে তার কাছে নেই কোনই দলিল।

            প্রভুর নিকটে রয়েছে তার হিসাব নিকাশ,

            অস্বীকারকারীরা নিসন্দেহে  হবে নিষ্ফল।

১১৭.           প্রার্থনা করো : হে পালক আমার ,

            মার্জনা করো , করো কৃপা দান,

            সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু তুমিই দয়াবান।

 

               [ছ’রা মুমিনুন সমাপ্ত ]

Latest posts