-->

আল কোরআনের কাব্যানুবাদ (১৪ নং ছূরা ইব্রাহিম) -আলহাজ্জ্ব প্রফেসর মনসুর উর রহমান


 

আল কোরআনরে কাব্যানুবাদ করছেনে আলহাজ্জ্ব প্রফসের মনসুর উর রহমান



১৪ নং ছূরা ইব্রাহিম
[ আল্লাহর রাছূল  হজরত ইব্রাহিম (আ;) ]


আয়াত ঃ ৫২ , রুকু ঃ    অবতীর্ন ঃ মক্কায়।
কৃপালু দয়াল আল্লাহর নাদে আরম্ভ প্রথম।

১. আলিফ - লাম  - রা ।
এ মহাগ্রন্থ তোমাকে দিলাম ,
যাতে তুমি মানুষকে নিয়ে যেতে পারো 
তোমার প্রভুর অভিপ্রায় মত
অন্ধকার হতে আলোকের দিকে ,
প্রশংসিত মহাপরাক্রান্ত আল্লাহর পথে।

২.      মহাকাশ আর পৃথিবীতে যা কিছু বিদ্যমান
সবকিছু তার আল্লাহর অধিকারে ।
অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে কঠিন দুর্ভোগ যাতনা।

৩. পরজীবনের চেয়ে পার্থিব জীবনকে যারা বেশি ভালবাসে
আর মানুষকে বিরত রাখে আল্লাহর পথ হতে ,
আর বক্রতা খুঁজে ফেরে তাতে ,
তারাই আবদ্ধ ঘোর বিভ্রান্তি জালে।

     প্রত্যেক রাছূল পািঠয়েছি আমি 
তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করে ,
যাতে তারা বর্ননা করে বিধান পস্টরূপে।
যাকে ইচ্ছা আল্লাহ বিভ্রান্ত করেন ,
যাকে ইচ্ছা করেন সুপথগামী।
মহাপরাক্রান্ত তিনি মহাবিজ্ঞানী।

৫. পাঠিয়েছিলাম মূছাকে আমি আমার নিদর্শন সহ
এই বলে ঃ
নিয়ে এসো তোমার জাতিকে ঘোর অন্ধকার হতে উজ্জ্বল আলোকে।
স্মরন করাও তাদের আল্লাহর বিগত দিনের কথা ,
রয়েছে যাতে ধৈর্যশীল আর কৃতজ্ঞ জাতির দৃষ্টান্ত অনেক।
৫. সে কথা ভাবো ,
স্বজাতিকে মূছা বলেছিলো যখন ঃ
হে আমার জাতি ,
           স্মরন করো আল্লাহর অনুগ্রহ অপার ,
যখন তোমাদের তিনি রক্ষা করেছিলেন
ফেরআউন জাতির কবল হতে ,
মর্মন্তুদ যন্ত্রনা যারা দিতো তোমাদের ,
হত করে দিতো তোমাদের পুত্র সন্তান
জীবিত রেখে তোমাদের রমনীগনে ।
এ ছিলো তোমাদের প্রভুর পরীক্ষা বিরাট।
                      ------------------------------------------------------------------------
১. অন্ধকার হতে আলোকের দিকে ।
যুগে যুগে আল্লাহ পাক অধর্ম অকল্যান তথা শিরক্ কুসংস্কার , অজ্ঞতা , অত্যাচার 
অনাচারের যাবতীয় অন্ধকার হতে আল্লাহর উপাসনা ধর্ম একাত্ববাদের যাবতীয় মঙ্গলের তথা আলোর পথ দেখাবার জন্য নাবী রাছূলকে প্রেরন করেছেন। তবে এক সময় প্রতি গোত্রের জন্য এক বা একাধিক নাবী রাছূল মনোনীত করেছেন।
কিস্তু সর্বশেষ নাবী মুহাম্মদ (ছা:)কে পৃথিবীর সমস্ত মানবকুলের জন্য প্রেরন করেছেন। সেজন্য হজরত (ছা:) এর বেলায় বলা হয়েছে ঃ সমস্ত মানুষকে অন্ধকার হতে আলোর দিকে আনার জন্য তোমাকে প্রেরন করা হয়েছে। আর হজরত মূছা (আ:) এর বেলায় বলা হয়েছে : তোমাকে প্রেরন করা হয়েছে তোমার সম্প্রদায়কে অন্ধকার হতে আলোর দিকে আনার জন্য। (৪নং আয়াত )
৪. স্বজাতির ভাষাভাষী করে।
বিভিন্ন সময়ে আল্লাহ পাক বিভিন্ন গোত্রের নরনারীকে সঠিক পথে আনার জন্য নাবী রাসূল পাঠিয়েছেন  এবং তাদের স্ব স্ব মাতৃভাষাতে ধর্মগ্রন্থ ও সহিফা প্রদান করেছেন। আর এটাই স্বাভাবিক যে , নাবী রাছূলগন তাদের জনগোষ্ঠির কাছে তাদের মাৃভাষাতে আল্লাহর বিধান সহজেই ব্যাখ্যা করে বোঝাতে পারেন।আর জনগনও তা সহজেই গ্রহন করতে পারে।
হজরত মহাম্মদ শুধু একটি মাত্র গোত্রের বা জনপদের জন্য প্রেরিত হননি। তিনি বিশ্বের তাবৎ মানুষের জন্য প্ররিত হয়েছেন। তবে কোরআন বা আল্লাহর বিধান আরবী ভাষাতে অবতীর্ন হওয়াতে ক্রীষ্টান ইয়াহুদী ও ইছলাম বিরোধী মানুষ বলতে শুরু করে Ñ রাছূল যদি সারা বিশ্বের মানুষের জন্য এসে থাকেন তাহলে তাঁর গ্রন্থের ভাষা আরবী কেন ? আল্লাহ বলে দিলেনÑ নাবী রাছূলেরা তাদের নিজ ভাষাতে তাদের উপর অবতীর্ন গ্রন্থ পেয়ে থাকেন। হজরত মুহাম্মদ (ছা:) কে যদি
আরবী ছাড়া অন্য ভাষাতে অবতীর্ন হতো , তাহলেও একই কথা উঠতো যে আরবী ভাষার রাছূল আর তার অজানা ভাষার গ্রস্থ তার পক্ষে সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করো সম্ভব নয়।
(৪)
৭. মনে করো তোমার প্রভুর ঘোষনা ঃ 
কৃতজ্ঞ থাকো যদি বর্ধিত করে দেবো অনুগ্রহ আরো ,
আর অকৃতজ্ঞ হও যদি , 
আমার দন্ড হবে ভয়াল কঠোর।

৮.        মূছার উক্তি ছিলো ঃ
তোমরা আর পৃথিবীর সকল মানুষ 
হয়ে যাও যদি অকৃতজ্ঞ সবাই ,
তবুও মহান আল্লাহ সুপ্রশংসিত স্বনির্ভর।
----------------------------------------------------------
৮. হয়ে যাও যদি অকৃতজ্ঞ সবাই ।
আল্লাহ পাক তাঁর অনুগত ও কৃতজ্ঞ বান্দাদের উপর সন্তষ্ট হন এবংতাদের পুরষ্কারের ব্যবস্থা করেন। পক্ষান্তরে তিনি অকৃতজ্ঞ নাফরান বান্দাদের উপর অসন্তুষ্ট হন এবং তাদের শস্তির ব্যবস্থা করেন। এতে কাফির মুশরিকরা মনে করে 
আল্লাহ মনুষের প্রশংসা আর ইবাদতের মুখাপেক্ষী। এ সব আল্লাহর খুব দরকার  (নাউজুবিল্লাহ)। আল্লাহ প্রত্যেক নাবী রাছূল মারফত জানিয়ে দিয়েছেনÑ তিনি অভাব শূন্য । তাঁর কোন কিছুরই প্রয়োজন হয়না। আর তিনি কারো প্রশংসা ও ইবাদতের মুখাপেক্ষী নন।হজরত মুহাম্মদ (ছা:) মারফত তিনি জানিয়েছেন Ñ পৃথিবীর সমস্ত মানুষ যদি আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ হয় , তাঁকে অস্বীকার করে , তাতে তাঁর কিছু এসে যায় না। তেমনি পৃথিবীর সমস্ত মানুষ যদি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ 
ও বিশ্বাসী হয়ে যায় , তাতেও তাঁর কিছু লাভ হয় না।তিনি প্রয়োজন আর  লাভ নোকছানের অনেক উর্ধে। তবে আল্লাহ পাক সমস্ত কিছুর একক ও অদ্বীতিয় স্রস্টা 
ও মালিক। তাঁর মত জ্ঞানী শক্তিধর চিরঞ্জীব স্বয়ংসম্পূর্ন আর কোন সত্তা নেই। কাজেই তাঁর সৃষ্ট জীবের উচিত তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া বা তাঁর রহমত ও নেয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা এবং তাঁর আদেশ নিষেধ মেনে চলা। এতে তাদেরই মঙ্গল নিহিত আছে।
৯.      তোমাদের কাছে আসেনি কি বার্তা তাদের ,
যারা ছিলো পূর্ববর্তী তোমাদের নূহ আদ সামুদের জাতি ?
আরো যারা পরবর্তী তোমাদের ?
এক আল্লাহ ছাড়া অবগত নয় কেউ তাদের বিষয়।
এসেছিলো তাদের কাছে প্রেরিত পুরুষগন পস্ট প্রমান সহ ,
রেখে দিতো হাত তারা তাদের মুখের উপর ,
(বিঘœ ঘটাতো তারা তাদের উচ্চারনে )।
তাদের উক্তি ছিলো ঃ
যা নিয়ে এসেছো তোমরা অবিশ্বাস করি তাকে ,
যার প্রতি আমাদের করো আহ্বান ,
সে বিষয়ে ঘোরতর সংশয়ে আছি দোদুল্যমান।

১০.      তোমাদের রাছূলেরা বলেছিলো ঃ
আল্লাহতে কি তোমাদের সন্দেহ জাগে ?
মহাকাশ আর পৃথিবীর স্রষ্টা যিনি 
তোমাদের ডাকেন তিনি ভঞ্জিতে তোমাদের যত পাপ রাশি , 
আর তোমাদের অবকাশ দিতে এক নির্ধারিত সময় অবধি।
বক্তব্য তাদের ঃ তোমারা তো আমাদের মতই মানুষ ,
বিরত রাখতে চাও পিতৃপুরুষের উপাসনা হতে।
অতএব আমাদের সম্মুখে আনো অকাট্য দলিল।

১১.      তাদের রাছূলেরা বলেছিলো তাদের ঃ
আমরা তো তোমাদের মতই মানুষ (রক্তে মাংসে গড়া )।
তবে তাঁর বান্দাদের মধ্য হতে 
যাকে ইচ্ছা আল্লাহ অনুগ্রহ করেন প্রদান।
তাঁর সম্মতি ছাড়া কোন ঐশী দলিল আনা অসম্ভব আমাদের।
আল্লাহর উপর ভরসা করা কর্তব্য মুমিনের।

১২.      কেনই বা হবো না আমরা আল্লাহতে নির্ভর ?
তিনিই তো আমাদের দেখালেন পথ।
তোমরা আমাদের যে যাতনা দাও ,
সহ্য করে যাবো ধৈর্য সহকারে। 
ভরসা করুক তারা আল্লাহর উপর যারা ভরসাকারী।
(৩)

১৩.      অবিশ্বাসীরা বলেছিলো তাদের রাছূলগনে ঃ
বহি®কৃত করে দেবো তোমাদের আমাদের রাজ্য হতে ,
অথবা ফিরে আসবে আমাদের ধর্মমতে।
এরপর  তাদরে কাছে এসে গেলো তাদের প্রভুর ঐশী নির্দেশ ঃ
ধ্বংস করে দেবো নিশ্চিত আমি অত্যচারীদের।

১৪.      তাদের পরে প্রতিষ্ঠিত করে দেবো সে রাজ্যে তোমাদের।
এ কথা তাদের জন্য , ভয় রাখে যারা দাঁড়াতে সম্মুখে আমার ,
আর ভয় রাখে আমার প্রতিশ্রুত শাস্তির।     


১৫.      বিজয়ী হতে প্রত্যাশী হলো তারা ( অবিশ্বাসীরা) ,
কার্যত ব্যর্থ হয়ে গেলো অবাধ্য উদ্ধত যারা। 

১৬.      তাদের প্রত্যেকের পরিনামে ভয়াল দোজখ
পান করানো হবে তাদের গলিত রক্ত পুঁজ।

১৭.      অতি কষ্টে গিলে নিতে চাইবে তাকে ,
অথচ অসম্ভব হয়ে যাবে গলধকরন।
সব দিক হতে মরন যাতনা এসে যাবে তার কাছে ,
তবুও মৃত্যু হবে না তার।
সম্মুখিন হতে হবে তাকে আরো ভয়াল যন্ত্রনার।

১৮.     স্বীয় প্রভুর অবিশ্বাসীদের কৃতকাজ এরূপ যেমন Ñ
ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ দিনে প্রচন্ডবেগে ভষ্মরাশি 
উড়ে নিয়ে যায় বায়ু।
কিছুই পাবে না তারা তাদের উপার্জন হতে।
এ হলো বিভ্রান্তি ঘোর।
ÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑ
৯. তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ।
আলÍাহর প্রেরিত ও মনোনীত প্রত্যেক নাবী রাছূল সম্পর্কে অস্বীকারকারী কাফের আর মুশরিকরা এ অভিযোগ তুলতো যে ,নাবী রাছূলগন তাদের মত রক্তে মাংসে গড়া মানুষ কেন হবে ? তারা ফেলেশতা বা তাদের মত শক্তিধর সত্বা হবে। তারা পৃথিবীর সাধারন মানুষের মত চলাফেরা আহার বিহার করবে কেন ? কাফের মুশরিকদের এ ধারনার বা বক্তব্যের উত্তর দ্ব্যর্থহীন ভাবে আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেনÑ  মানুষের কাছে মানুষের মত মানুষকে নাবী বা রাছূল সনোনীত করে পাঠানো হয়েছে।
        এতদ্সত্বেও অস্বীকারকারীরা ও মুশরিকরা নাবী রাছূলগনকে স্বীকার করে নেয়নি। কারন তারা যে কোন অজুহাত খাড়া করে অস্বীকার করে গেছে। হজরত 
মুহাম্মদ (ছা:) সম্পর্কেও একই কথা বরা হয়েছিলো। তার উত্তর আল্লাহ পাক রাছূল (ছা:) এর মাধ্যমে ব্যক্ত করেছেনÑ বলে দাও হে রাছূল , আমি তমোদের মত রক্তে মাংসে গড়া একজন মানুষ। তা সত্বেও মুসলমানদের মধ্যে একদল গোঁড়া আলেম নামধারী ব্যক্তি ,অজ্ঞ পীর ,ভক্ত মুলশীদ তরিকা পন্থী বিভ্রান্ত ছুফী
সাধক প্রচার করেন মুহাম্মদ (ছা:) মাটির তৈরি নন নূরের তৈরি। তাকে মানূষ বলা যাবে না। এ ধরনের মতবাদ ব্যক্ত করে নাবী পূজার প্রচলন করেছে। তাকে 
তারা আল্লাহ তারা আল্লাহ তাআলার সমকক্ষ ভাবতেও পিছপা হয়না।যা সম্পূর্ন শিরক।

১৯.      লক্ষ্য কি করো না তুমি ?
এই পৃথিবী আর আকাশ মন্ডলী
সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ যথাযথ ভাবে ,
ইচ্ছা হলে তাঁর
বিলুপ্ত করে দিতে পারেন অস্তিত্ব তোমাদের ,
আবার নতুন সৃষ্টি নবরূপে এনে দিতে পারেন তিনি।

২০.      আর এ কাজ অসাধ্য নয় কিছু আল্লাহর কাছে।

২১. আল্লাহর সম্মুখবর্তী হবে সকলে।
আবেদন জানাবে দুর্বলেরা উদ্ধত অহংকারীদের কাছে ঃ
আমরা ছিলাম তোমাদের তাবেদার ,
এখন কি তবে বাঁচাতে পারো না কিছুমাত্র আমাদের
আল্লাহর দন্ড হতে ?
তাদের জবাব ঃ আল্লাহ যদি আমাদের দেখাতেন সৎপথ ,
আমরাও তোমাদের দেখিয়ে দিতাম।
এথন তো সবই সমানÑ আমাদের অস্থির অথবা ধৈর্যশীল হওয়া।
আমাদের নেই কোন পরিত্রান।

২২.      যখন মীমাংসিত হয়ে যবে সব ,
শয়তানের ভাষ্য হবে ঃ 
তোমাদের আল্লাহ দিয়েছিলেন প্রতিশ্রুতি Ñ সত্য প্রতিশ্র“তি ,
আমিও অংগিকার দিয়েছিলাম তোমাদের কাছে ,
প্রদত্ত সে অংগিকার আমি ভংগ করেছিলোম
কোনই প্রভুত্ব ছিলো না আমার তোমাদের উপর।
আমি কেবল তোমাদের ডেকেছিলাম  ,
আমার সে ডাকে তোমরা সাড়া দিয়েছিলে।
অতএব অভিযুক্ত করো না আমাকে।
নিজেরাই তোমরা তোমাদের অভিযুক্ত করো।
তোমাদের রক্ষা কাজে আমি অপারগ ,
তোমরাও আমার উদ্ধারে সক্ষম নও।
বিগত পূর্বে তোমরা আল্লাহর অংশী করেছিলে আমাকে ,
তাকে আমি (আজ ) অস্বীকার করি। 
অত্যাচারীদের দন্ড মর্মবিদারি।
ÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑ
১৫. নতুন সৃষ্টি নবরূপে এনে দিতে পারেন তিনি।
আল্লাহ পাক কোরআনের বহু জায়গায় তাঁর ক্ষমতা ও অধিকারের বিশালত্ব ও অসীমত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে এ ধরনের উক্তি করেছেন। যিনি মহাকাশ পৃথিবীর যাবতীয় সবকিছুর স্রষ্টা। তিনি যেমন ইচ্ছা সৃষ্টি করতে পারেন আবার যেমন ইচ্ছা  ধ্বংস করতে পারেন। আবার ধ্বংসের উপর নতুন করে সৃষ্টি করতে পারেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষের কাছ হতে স্রষ্টা হিসাবে আনুগত্য উপাসনা ও কৃতজ্ঞতা দাবি করতে পারেন। কিšতু আদতে মানুষ যখন তাঁকে ও তাঁর দাবিকে অস্বীকার করে নাফরমান ও বিদ্রোহী বান্দায় পরিনত হয় , তখন তিনি স্বভাবতই তাঁর ক্রোধের প্রকাশ ঘটাতে পারেন , যাতে তাদের ধ্বংস করে দিয়ে নতুন এক মানব সমাজ এনে দেবেন , যারা তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দা হবে।এ কাজ তিনি বহুবার করেছেন।এ ব্যাপারে কউ কেউ আবার আরেক ধরনের কথা বলেন।তাদের মতে জ্বিনের পরে যেমন মানুষ , মানুষের পরে তেমন আরেক ধরনের প্রান সৃষ্টি করবেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ ভাল জানেন।  

২৩. বিশ্বাসী আর সৎশীলদের দেয়া হবে এমন উদ্যান ,
পাদদেশ দিয়ে যার নদী প্রবাহিত ,
স্বীয় পালকের সম্মতিক্রমে চিরস্থায়ী হয়ে যাবে সেখানে তারা ,
আর সেখানে ‘ছালামে’র বানী দ্বারা অভ্যর্থিত হবে তারা।

২৪. লক্ষ্য কি করো না তুমি ?
কি ভাবে উপমা টানেন আল্লাহ 
পবিত্র বানীর তুলনা সৎবৃক্ষের সাথে ,
মূল যার গ্রোথিত সুদৃঢ় রূপে ,
শাখা যার প্রসারিত উর্ধ আকাশে।

২৫. প্রতি মৌশুমে যে বৃক্ষ ফল দেয় আল্লাহর নির্দেশে ,
আর এভাবেই দৃষ্টান্ত আনেন আল্লাহ মানুষের কাছে ,
যাতে তারা শিক্ষা নিতে পারে।

২৬. মন্দ বানীর তুলনা এমন মন্দ বৃক্ষ ,
মূল যার বিচ্ছিন্ন ভূপৃষ্ট হতে ,
নেই যার কোন স্থায়ী অবস্থান।

২৭. শ্বাশত কলেমায় বিশ্বাসী যারা ,
সুদৃঢ় রাখেন আল্লাহ তাদের ইহকাল পরকালে।
বিভ্রান্ত করেন আল্লাহ অত্যাচারীদের। 
তাই করেন আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন। 

(৫)
২৮. তোমরা কি দেখো না তাদের ,
যারা আল্লাহর অনুগ্রহ বদল করে অবিশ্বাস দিয়ে ?
আপন গোত্রকে নিয়ে আসে তারা ধ্বংস বিবরে।

২৯      জাহান্নামে , ঢুকে যাবে তারা সেখানে ,
যা অতি মন্দ বাসস্থান।

৩০.      আল্লাহর সমকক্ষ তৈরি তরে তারা 
পথভ্রষ্ট করে দিতে ( মানব সমাজ )।
তাদেরকে বলো ঃ ভোগ করো কিছুকাল ,
অবশেষে তোমাদের প্রত্যাবর্তন সেই আগুনে।

৩১.      বলে দাও আমাদের বিশ্বাসী বান্দাদের ঃ
তারা যেন নামাজ প্রতিষ্ঠা করে ,
আর প্রকাশ্যে অথবা গোপনে ব্যয় করে যেন 
আমার দেয়া জীবিকা হতে ,
সে দিনের আগে , যেদিন বন্ধ হয়ে যাবে
বেচাকেনা আর বন্ধুত্ব যত।

৩২.      মহাকাশ মন্ডলী আর পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ ,
আকাশ হতে বারি বর্ষান যিনি ,
উৎপন্ন হয় যাতে ফলাদি ফসল
তোমাদের জীবিকা রূপে।
বশিভূত করেছেন নৌযানগুলো তোমাদের,
বয়ে চলে যাতে সাগর বক্ষে তারা তাঁর নির্দেশে।
নিয়োজিত করেছেন আরো যত নদনদী 
তোমাদের কল্যান কাজে।
   
৩৩.      তোমোদের কল্যানে নিয়োজিত করেছেন আরো 
একই নিয়মে অবিরাম ছুটে চলা চাঁদ সূর্যকে ,
নিয়োজিত করেছেন দিবারাত্রি তোমাদের কল্যানে।

৩৪.      যা কিছু চেয়েছো তোমরা
যথাযথ সে সব তিনি দিয়েছেন তোমাদের।
গুনতে থাকো যদি অনুগ্রহ আল্লাহর ,
অপারগ হয়ে যাবে তার সংখ্যা নিরুপনে।
আসলে মানুষ জাতি অত্যাচারী আর অকৃতজ্ঞ অতি।

(৬)
৩৫. সে কথা ভাবো ,
ইব্রাহিমের আবেদন ঃ হে আমার প্রভু !
এ নগরকে করো নিরাপদ।
আমাকে আর আমার সন্তানদের বাঁচাও মূর্তি পূজা হতে।

৩৬.      হে আমার পালক ! 
           এই প্রতিমারা পথভ্রষ্ট করেছে বহু মানবে।
অতএব যে আমার অনুসারী , সেই দলভূক্ত আমার ।
তবে আমার অবাধ্য হয় যদি কেউ ,
তুমি আছো ক্ষমাকারী দয়ালু অশেষ।

৩৭.      হে প্রভু আমাদের !
আমার বংশবৃন্দের বসতি বানিয়ে দিলাম
অনুর্বর এক মরুপ্রান্তরে তোমার পবিত্র ঘরের কাছে ,
এ আশাতে , হে প্রভু াামাদের !
তারা যেন নামাজ প্রতিষ্ঠা করে ।
তাদের প্রতি অনুরাগী করে দাও কিছু মনুষের মন ,
আর ফলফসল হতে তাদের জীবিকা করে দাও প্রভু ,
যাতে তারা কৃতজ্ঞতা দেখাতে পারে।

৩৮.      অবগত আছো তুমি , হে আমাদের প্রভু !
অন্তরে যা কিছু গোপন রাখি , আর যা কিছু প্রকাশ করি।
মহাকাশ পৃথিবীর কিছুই লুকানো নয় আল্লাহর কাছে।
ÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑ
৩৫. এ প্রতিমারা পথভ্রষ্ট করেছে বহু মানবে।
কোন প্রানীর প্রতিকৃতি বা কোন শক্তির প্রতিমা সে বাস্তব বা অবাস্তব কাল্পনিক যাই হোক ,আল্লাহর কাছে স্বীকৃত নয়। কার ইতিহাসে দেখা যায় যুগে যুগে আলÍাহর সাথে যে অংশীবাদ সৃষ্ট করা হয়েছে তা সবই প্রতিকৃতি প্রতিচ্ছবি বা প্রতিমার মাধ্যমে। কোন শক্তিশালী দানব মানব যোদ্ধা রাজা বাদশাহ জ্ঞানী গুনী নেতা শিল্পী যারাই হোক না কেন তাদের প্রতিচ্ছবি প্রতিকৃতি বা মূর্তি শেষ পর্যন্ত শ্রদ্ধা সম্মান ভালবাসা ভয়ভীতি ও ভক্তির আতিশর্যে দেবতা বা ত্রানকর্তা বা ভয়ংকর কোন শক্তি রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সাধারন মানুষ তাদের মূর্তির বা ছবির পদপ্রান্তরে তাদের নিষ্ঠ বা অনিষ্ঠের প্রার্থনা জানিয়েছে। এক কথায় তাদের উপাসনা করেছে। আজ অবধি এ প্রক্রিয়ায় প্রতিমা  প্রতিচ্ছবি ও মূর্তিপূজা চলছে  বলতে গেলে মুছলিম অমুছলিমদের ঘরে ঘরে। কেউ অলৌকিক শক্তির আধার রূপে কেউ বরেন্য ব্যক্তিত্বের আধারে পূজিত হচ্ছে। এ সব কিছুই  আল্লাহর একত্ববাদের পরিপন্থি।তাই প্রতি যুগে মূর্তি বা প্রতিমাকে ধ্বংস বা উৎখাত করার জন্য আল্লাহর মনোনীত নাবী রাছূলগন এসেছেন। হজরত ইব্রাহিম(আ:) সক্রিয়ভাবে মূর্তি পূজার বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। শেষ নাবী ও রাছূল হজরত মুহাম্মদ(ছা:) ঐ একই কাজ করে গেছেন। অন্য নাবী রাছূলগন না পারলেও তিনি বহুদেশ হতে মূর্তি পূজাকে উৎখাত করে গেছেন। মূর্তি বা প্রতিমা আল্লাহর অংশীবাদের প্রতীক। তাদের বিভ্রান্তি হতে অনেক মানূষ মুক্তি পেয়েছেন।
    আজ মুছলিম সমাজকে এ মূর্তি  প্রতিমা প্রতিকৃতি ও প্রতিচ্ছবি সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে। কারন অমুছলিম বা মুছলিম বিদ্বেষীরা ষড়যন্ত্র আর ইছলাম ধর্মে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কৌশল হিসাবে মূর্তি বা প্রতিকৃতি মুছলমানদের ঘরে ঘরে প্রবেশ করাচ্ছে তাদের সৃষ্ট নানা পথ পন্থায়। তাদের তৈরি উছিলা যেমন ধর্ম ,সভ্যতা ,সং®কৃতি ,ভদ্রতা ,ঐতিহ্য  আভিজাত্য ,ইতিহাস চেতনা ,বিনোদন ,মুক্তচিন্তার বিকাশ , বিশ্ব মানবতা ,আপ্যায়ন ,
গৌরব গাঁথা , পুরাকৃর্তি সংরক্ষন , জ্ঞাতিত্ব ও জাতিত্ব প্রভৃতি রক্ষার নামে মুছলমানদের ঘরে ঘরে আজ মূর্তি প্রতিচ্ছবি বহুভাবে রক্ষিত ও পূজিত হচ্ছে অমুছলিমদের পূজার মতই। তাছাড়াও মুছলমান সমাজে পারিবারিক ,সামাজিক ও রাষ্ট্রিয়ভাবে এ ধরনের পূজার আয়োজন অহরহ করা হচ্ছে।
সেজন্য আল্লাহ পাক এ উক্তি করেছেন। মূর্তি প্রতিমা প্রতিকৃতি মানুষের পথবিভ্রান্তির মূলে যে ক্রিয়াশীল তা থেকে তিনি মুছলমানদের সতর্ক করেছেন। 
৩৬. প্রানহীন এক মরু প্রান্তরে। 
হজরত ইব্রাহিম (আ:) তার শেষ বয়সের প্রথম পুত্রসন্তান হজরত ইছমাইল আ:) আর তার মা হজরত হাজেরাকে মক্কার এক উষর মরু প্রান্তরে জনমানবহীন স্থানে নির্বাসিত করেছিলেন। বিরান প্রান্তরে তার আপনজনদের রেখে যাওয়ার সময় তাদের নিরাপত্তা আর জীবিকার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। তারই ফলে সেকানে আল্লাহর হৃকুমে জমজম কুপের সৃস্টি হয়েছিলো। পরবর্তীতে সেখানে জনবসতি গড়ে উঠেছিলো। এরপর হজরত ইছমাইল একটু বড় হলে তাকে সংগে নিয়ে কাবাঘর নির্মান করেছিলেন।হজরত ইব্রাহিম (আ:) তারই পাদদেশে হজরত ইছমাইল ও  তার জননীকে স্থায়ী বাবে বসবাসের জন্য রেখে যান। যাওয়ার সময় দ্বীতিয়বার তার বংশধরের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থসা করেছিলেন ঃ তার যেন নামাজী হয়। আল্লাহ যেন তাদের পর্যাপ্ত জীবিকা দান করেন।
                        ৩৯. যত প্রশংসা পাঠ সব আল্লাহর ।
আমার বার্ধক্যকালে দিয়েছেন যিনি
ইছমাইল ইছহাক ( দুই পুত্র সন্তান )
নিশ্চয় আমার প্রভু প্রার্থনা শোনেন আমার।

৪০. হে আমার প্রভু !
আমাকে আর  আমার বংশবৃন্দের মাঝে 
বানিয়ে দাও নামাজ প্রতিষ্ঠাকারী।
হে পালক আমদের ! 
মঞ্জুর করো প্রার্থনা আমার ।

৪১. হে আমাদের প্রভু !
সেই মহাবিচারের দিনে 
ক্ষমা করে দিও আমাকে আর আমার মাতাপিতাদের  ,
ক্ষমা করে দিও বিশ্বাসীদের।
(৭)
৪২. অত্যাচারীদের কর্মকাজে
আল্লাহকে বেখেয়াল ভেবোনা কখনো ,
তবে তিনি অবকাশ দেন তাদের 
সেই অবধি যে দিন তাদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে।

৩২. আকাশের দিকে চেয়ে ছুটবে তারা 
ভীত বিহ্বল অন্তরে ,
নিজেদের দিকে দৃষ্টি তাদের ফিরবে না আর ,
উড়ে যাবে অন্তর শূন্য হয়ে।

৩৩. মানুষকে সতর্ক করো সেই দিনের Ñ
যেদিন ভীষন শাস্তি হবে আপতিত।
অত্যাচারীদের প্রার্থনা হবে ঃ
হে প্রভু আমাদের !
অবকাশ দাও কিছু কাল ,
সাড়া দেবো তোমার আহ্বানে ,
অনুসারী হবো রাছূলের।
আল্লাহর  জবাব ঃ
বিগত পূর্বে তোমরা বলোনি কি প্রতিজ্ঞায় ঃ
 নেই কোন তোমাদের পতন।

৩৪. অথচ এমন জাতির বসত ভূমিতে ছিলো তোমাদের বসবাস ,
অত্যাচারী ছিলো যারা নিজেদের প্রতি।
আর তোমরা তো জানো ,
কেমন আচরন করেছিলাম তাদের সাথে ,
দৃষ্টান্ত যাদের এনেছিলাম তোমাদের কাছে।

৩৫. ঘোরতর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো তারা , 
তাদের সে সব ষড়যন্ত্র রক্ষিত আল্লাহর কাছে।
এত ভয়ংকর ছিলো চক্রান্ত তাদের
টলে যেতো পর্বত যাতে।
                       ÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑ
৪৬. চক্রান্ত তাদের।
যুগে যুগে,যে সব আল্লাহদ্রোহী কাফের মুশরিক আল্লাহ ও তাঁর রাছূলগনের বিরূদ্ধে কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহন করেছিলো ,তাদের মধ্যে নামরুদ ও ফেরআউন বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।
নামরুদ ছিরো কিণাল দেশের সম্রাট। সে তার ক্ষমতা আর  ঐশ্বর্যের দাপটে নিজেকে প্রভু ও ও খোদা বলে দাবী করতো আর তাদের প্রজাদের উপর অকথ্য অত্যচার ও নির্যাতন চালাতো।
হজরত ইব্রাহিম (আ:) যখন সমস্ত সৃষ্টি জগতের মালিক ও প্রভু এক আল্লাহর কথা নামরুদের সামনে পেশ করলেন ,তখন নামরুদ এ কথা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো এবং আল্টলাহ নামের সত্বাকে বিলুপ্ত করার জন্য আল্লাহর বিরূদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করলো।
   তার ধারনা মতে আল্লাহ আকাশে থাকেন বলে সে আল্লাহকে জয় করার পরিকল্পনা করলো
এবং আল্লাহকে হত্যা করার ঘোষনা দিলো। পরিকল্পনা মোতাবেক একটি চৌকির কোনায় দুটি পোষা বড় ক্ষুধার্ত শকুন বাঁধলো। সে দুটি ক্ষুধার্ত শকুনের মাথার উপর লাঠিতে বেঁধে কিছু গোস্ত ঝুলিয়ে রাখলো। ক্ষুধাতুর শকুন গোস্তের লোভে উপরে উঠতে লাগলো। ফলে চৌকি উপরে ভেসে চললো। ঐ চৌকিতে নামরুদ ও তার এক সাথী অস্ত্রসহ উঠে বসেছিলো।চৌকি উঠতে উঠতে আকাশের দিকে বহুদুর উঠে গেলো। নিচের লোকজনকে ছোট মাছির মত মনে হতে লাগলো।
     গর্বিত নামরুদ হুংকার ছাড়তে শুরু করলো, কোথায় ইব্রাহিমের প্রভু আর কোথায় তার এক 
আল্লাহ ? তাঁকে হত্যা করে আকাশের রাজত্ব দখল করে নেবে। এ বলে সে আকাশের দিকে সুতীক্ষè তীর ছুঁড়তে থাকলো। কথিত আছে আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতা তার তীরে রক্ত লাগিয়ে ফেরৎ পাঠালো। রক্ত মাখা তীর দেখে নামরুদ ভীষন উল্লসিত হয়ে গোস্তের রাঠি নিচে ঝুলিয়ে দিয়ে মাটিতে নেমে এলো এবং সদম্ভে প্রচার করলো ইব্রাহিমের আল্লাহ নিহত হয়েছে । সে আকাশ দখল করেছে। এ দাম্ভিক নামরুদ পরবর্তীতে একটি ক্ষুদ্র মশার দ্বারা নিহত হয়।
      আল্লাহদ্রোহী ফেরআউনও এ রকম একটি পরিকল্পনা করেছিলো আকাশ জয়ের।তার মন্ত্রী হামানের সাহায্যে ইঁটের উঁচু স্তম্ভ তৈরি করেছিলো আআল্লাহর সাথে মোকাবিলা করার জন্য
এবং তৎসংগে আকাশ দখল করার জন্য। পরিশেষে এ ধরনের পরিকল্প না হাস্যষ্পদভাবে ব্যর্থ হয়েছিলো। কাফেরদের মধ্যে দু একজন ছাড়া আল্লাহর বিরুদ্ধে এ ধরনের বড় পরিকল্পনা সাধারনত আর কেউ করেনি। আল্লাহ পাক আল্লাহদ্রোহী কাফেরদের ব্যাপক পরিকল্পনা ও তার অপরাধের ব্যাপকতা বোঝাবার জন্য পাহাড় টলে যাওয়ার দৃষ্টান্ত দিয়েছেন। এতবড় অপরাধে পাহাড়ও আর স্থির থাকতে পারেনা। যদিও এ সব ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা আল্লাহর শক্তির কাছে অতি তুচ্ছ।    


৪৭.        ভেবো না কখনো Ñ
নবীদের সাথে তাঁর ভংগ করেন অংগিকার ,
মহাপরাক্রান্ত আল্লাহ দন্ড দানকারী।

৪৮.         যেদিন এ পৃথিবী অন্য পৃথিবী হবে , 
বদলে যাবে আকাশ ,
দাঁড়াবে মানুষ এসে এক পরাক্রান্ত আল্লাহর সম্মুখে ,

৪৯.        অপরাধীদের দেখবে সেদিন তুমি Ñ
শৃংখলিত আবদ্ধ।

৫০.        গন্ধকের পরিচ্ছদ গায়ে ,
আগুনে আচ্ছন্ন মুখমন্ডল।

৫১.        প্রতিজনে কৃতফল দেবেন আল্লাহ তাদের কৃতকর্মের।
ত্বরিৎ আল্লাহ হিসাব গ্রহনকারী।

৫২.        মানুষের জন্য এক আগত বার্তা ,
যাতে তারা বুঝে নিতে পারে Ñ
একমাত্র উপাস্য তিনি।
তবে এ থেকে উপদেশ পায় জ্ঞানী লোক যারা।
-------------------------------
  ৪৮. যেদিন এ পৃথিবী অন্য পৃথিবী হবে।
আল্লাহ পাক কোরআনুল কারিমের অনেক আয়াতে কেয়ামত শুরুর বর্ননা দিয়েছেন। শিংগাতে ফুৎকার ঘটে যাওয়ার পর মহাকম্পনে পৃথিবীর পাহাড়পর্বত গাছপালা ইমারত সৌধ-
মালা নদনদী যা কিছু আছে সব চূর্ন বিচূর্ন হয়ে একাকার হয়ে যাবে। আকাশে গ্রহ উপগ্রহ নক্ষত্রের পরষ্পরের টক্করে সব কিছু ভেংগে চুরে খসে পড়তে থাকবে। এ ভাবে সমস্ত পৃথিবীর উঁচুনিঁচু একাকার হয়ে একটি সমতল ভূমিতে পরিনত হবে।Ñ হজরত আবু হুরাইরা (রা:)।        সমতল এ পৃথিবীর মাটির রং হবে ময়দা সদৃশ ,দেখাবে রূপার মত। আকাশের রং হবে
সোনার মত Ñ হজরত আলী (রা:)।
এ পৃথিবী ও আকাশের বর্তমান যে রূপাবয়ব তা আর থাকবে না। গাছপালা নদীনারা পাহাড় পর্বতের কোন চিহ্ন আর খুঁজে পাওয়া যাবেনা। মানুষের চেনা পৃথিবি সম্পূর্ন এক অচেনা পৃথিবীতে পরিনত হবে। আল্লাহ পাক এ অবস্থার কথাই ৪৮ নং আয়াতে বর্ননা করেছেন।
ময়দা ও আটার মত ্ পৃথিব তে পরবর্তী শিংগার ফুৎকারে জ্বীন ইনছান প্রানীকুলের পুনরুত্থান ঘটবে। সবাই আল্লাহ পাকের সম্মুখিস্থ হয়ে যাবে। (বুখারী - মুছলিম )। এটাই হবে হাশরের মাঠ। এখানেই বিচার কাজ শুরু হবে। হিসাব নিকাশ এখানেই নেয়া হবে। 

Latest posts