-->

স্বাধীনতাধর্মী কবিতা আবৃত্তি-মোজাহিদ ইফতেখার হাবিব

মোজাহিদ ইফতেখার হাবিব



           শিরনাম বিহীন জীবনের নক্শায় ইঁদুরের গল্প            

: সুপ্রিয় দর্শক শ্রোতা, ইনি মানে যাকে দেখছেন কার সত্তায় বেষ্টিত মুখশ্রী, মঞ্চের চাদর অলঙ্কৃত একজন খাসা সভাপতি।{কিন্তু এ ব্যাটা ভন্ড মেঘমাতালি ভীমরুল। বেহুদাপনায় এর বাপের চৌদ্দষ্টির চাদর মন্তব্যের খাতায়। বংশীয় রক্তের আধ্যাত্মিকতায় শেষ পর্যন্ত ইঁদুর মেরে ছিল। অবিশ্বাস হলে বাড়ির ইঁদুরকে জিজ্ঞাসা করুন। }

: কিছু কি অকপটে বলছো ?

ঃ না মানে হ্যাঁ, বলছিলাম যা -, আড়ষ্ট পৃথিবীর প্রান্ত থেকে প্রান্তে যখন ভাষার ক্ষুধা, পেট চাপকে নড়বড়ে বর্ণমালা স্বাধীন ভাবে দাঁড়ানোর প্রচেষ্ট , ঠিক তখন কন্ঠক¤েপর নগ্নতায় শ্রমভাঙ্গা কন্ঠ মজুরের থেতলানো চোখের কষ্ঠসভায় ইঁদুর নিধন কর্মসূচীর ডাক দেওয়া মাত্রই সভার চাতালে কাকদৃষ্টির প্রমোদ উল্লাসে ভক্তদের যৌন ক্ষুধা নিবারণ হয়েছিল মাত্র।

       : ওহে ছোকরা ইতিহাসের আলো চোখে পড়েনি মনে হয়, মাইক্রোফোন পেয়েই দেওয়ালে ছায়া রেখে নাচার তালে বিদুৎ চমকাও-, তবে পরিচয়ের ঘটনাটা কিঞ্চিৎ বেমানান, ইঁদুরের লেজের মত, হবে না কেন? দাঁড়ি গোঁফের আনাচে কানাচে রবীন্দ্রনাথ মার্কা বইয়ের দালান কোঠা অথবা ¯পন্দিত নজরুল সংক্রামক শহুর রাস্তার মোড়ে লেজুড় ভিত্তিক পাতিহাস দেখলে এমনি হয়।
      
       : আমরা ভন্ড মুক্ত সমাজ চাই।

: আমরা ইঁদুর মুক্ত সমাজ চাই। এতে ভন্ডামির কি আছে , সমাজের কারীগরকে তোমরা ভন্ডই বলো (যেমন আমাকে বলছো)
ঃ গভীরতর মৃতুকে ঠেকিয়ে যে বংশীবাদক পৃথিবী থেকে ছিটকে পড়েছিল  আভিমানী চাঁদেও কংকাল জড়ানো কলংক নিয়ে। বায়ুবদ্ধ হুতাশের পাহাড় গুহায় সেই একদিন অধিকারের অকারণে কারণ হয়ে শেষ বাঁশি বাজিয়েছিল।

: আর সেখান থেকে কিন্তু সেই শিশু-কিশোর কিশোরী আজ ইঁদুর হয়ে শহুরে বাবুদের ধাওয়া করছে। (যেমন তোমরা) তাইতো বাবুরা মানে আমরা শহুরের পিছন রাস্তা কাটছি-ভাঙ্গছি, কেটে কেটে পাকস্থলীর দিকে এগুচ্ছি হে-হে-হে এটাই বিকল্প , তাই সল্প আয়োজন।
ঃ দেখুন, দেখু-ন বুড়বাবুদের কারসাজি। ভন্ডকলন, সত্যহরন, ঋণখেলাপী আর্তশ্বাসে বংশীবাদক পাহাড় দেখে মুখোশ পড়ে কাটছে পাহাড়, ভাঙ্গছে শহর, শহরের পিছন রাস্তা, ইঁদুরের ভয় ইঁদুরের উৎপাত। কাটছে ভাঙ্গছে, ভাঙ্গছে ভাষা, স্বাধীনতা, বাঙ্গালীর সব রাস্তা। কাটছে ভাঙ্গছে কবির চেতন, হৃদয় পান্ডুলিপি।  প্রজন্মের ভয় প্রজন্মের উৎপাত। ইঁদুরের ভয় ইঁদুরের উৎপাত। এই শিল্পকরণে চালবাজীর তীর্থক্ষেত্র এই বাংলা মনমুগ্ধকর আবাসস্থল তাদের ওই পাকস্থলী, হজম ক্রিয়ার রান্নাঘরে ইঁদুর যেন না ঢুকে তাই তো বলি-

তামাম ভন্ডদের পাকস্থলী স্মৃতিসৌধে
পরিণত হোক- নাকি সুধিবৃন্দ
কিছু একটা বলুন.......
ঃ রামছাগল... ॥

::::::::::::::::::::::::::::
ছাত্রকোষে যন্ত্রণার শব্দ শুনি


যতটা নিজেকে ভাবাই ছাত্রকোষের শুদ্ধ ছন্দে
ততটা ভাব উৎসে ঠাওর হয় না ।
চোখের সিঁড়িতে দৃষ্টি বেয়ে উঠতেই
মানচিত্র অন্ধকার হয়ে যায় ।
শ্বাসের দাঙ্গায়
শ্রমিকের শব্দ
সাবল খান্তার শব্দ
অন্ধকার ভাঙ্গার শব্দ করি আমি।
যেভাবে ছাত্র জীবনের সিঁড়ি ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে
রোজ দাঁত বসানো রেলিংগুলো শব্দ কণায় পরিপূর্ণ
আজকাল আলোগুলো বাদুরের মত
রেলিংগুলোতে ধোঁয়ায় লেপটে থাকে,
গড় গড় করে নামে বুকের ভেতর ।
দৃষ্টিতে শব্দিত ধোঁয়া,
ধোঁয়াগুলো যন্ত্রণা
যন্ত্রণার, শব্দ শুনি আমি
আর দুঃস্বপ্নের আর্তনাদে বলে উঠি
বৈষম্যের মাঝেও
একদিন ছাত্র ছিলাম
ছাত্রকোষের ।
                                  ৮/০৯/৯৭ ইং
                                      রাজশাহী
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
গল্পের স্বাধীনতা

কিভাবে রাত কেটে স্বাধীনতা আসে
রাত্রিচর বুঝতে পারে।
ক্ষুধায় জরাগ্রস্ত ঘৃণা, রাতকানার চাহিদা বাড়ায়।
শ্রমিক দেহ সাবলিল আকার ক্ষয়ে পাংশুবর্ণে
পতাকায় দৃষ্টি মোছে
তৈলাক্ত ক্রোধ ছিটানো পশম তন্তুতে স্বাধীনতার রঙ
দ্যাখা যায় সূর্যের আকাশে।
এখন চোখ ফোটানো ব্যক্তিত্বদের পোশাক নির্বাচন।
কে কখন যুদ্ধ করেছে, মামুলী ধীক্কার।
কে বলতে পারে দেহের যুদ্ধে মানসিক ট্রেনিং জমা দিয়েছে
রঙ বদলের প্রত্যাশায়?
যৌবনাক্ত প্রজন্ম গল্প শুনে
কল্পনাশক্তির সৌন্দর্য অপরিস্কার হলেও
কখনো ঘৃণা কাটিয়ে বলতে পারেনি
মুক্তিযুদ্ধে যেত হয়েছিল কেন?
প্রশ্ন শতকরায় ফিরে সাধন মঞ্চে।

আড্ডার বন্ধরা মাথার খুসকীর বাজেটে
সমবয়সী ঝাঁড়ফুঁকে বলে,
যা ছিল সেই রাতগুলো একটি দল, একটি মত
“স্বাধীনতা”
অথচ আজকার দলান্তরে রাতে ফসফরাসে জ্বলে
রাতে স্বাধীনতা গজায় বাতাসে।

প্রজন্ম গল্প শুনে
পঙ্গু স্বাধীন আরোহী রিক্সা চালক
ভাঙ্গা হাত টেবিলে গুছিয়ে চায়ের আকার আয়তনে
নিজেকে রাজাকার উপাধি দিয়ে ওঠে যায়।
বাঁচার উপলক্ষে এমন গল্প ভাইরাস যুক্ত নীলপট্টি।

বাবা নাকি উৎসর্গ করেছিলেন,মায়ের মুখে শোনা
জন্ম আমার দেশ স্বাধেিনর তালিকাভূক্ত আভাস
এখন সেই উৎসর্গ ভুলেও উচ্চারন করেন না। কেন-
একি ভুল জন্ম আমার।
নয় মাসের রক্ত স্রাবে
পঁচিশ বছরের মানসিক যুদ্ধে
পরাজিত প্রজন্ম আমি এক অসার দেহমাত্র।
নব বধু গল্প শুনে কানে কানে বলে
কতটুকু ছিলে গো বঙ্গ উৎসর্গ সাধক।
সেই ভুল নাম ভুল স্বাদযুক্ত পিতার স্বাধীনতায়
ইতিহাস পঁচা কালিতে লেখঅ হয় গল্পের জন্য
আমি ও ব্যবহার হয়েছি মাত্র ॥
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::: 


Latest posts